ফ্রি তে কেন আমরা কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম (windows xp, vista, 7, 8, others), সফটওয়্যার, গেমস এবং এন্টি-ভাইরাস ব্যবহার করবো ? এর বিস্তারিত পড়ুন । আজ আমি আপনাদের কিছু সুপ্ত জ্ঞানকে জাগ্রত করার চেষ্টা করবো । আশা করি আমার টিউনটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে ।
free
প্রথমে শুরু করছি কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম(windows xp, vista, 7, 8, others) দিয়ে ।
আমরা
যারা কম্পিউটার ব্যবহারকারী আছি, তাদের তো অব্যশই কম্পিউটারে অপারেটিং
সিস্টেম ইনস্টল দিতে হয় এবং এটি ছাড়া তো কম্পিউটার চালানোর কথা ভাবতেও কষ্ট
হয় । যাই হোক আমার মনে হয়, আমরা বাঙ্গালিরা প্রায় ৯৯.৯৯ ভাগ মানুষ
কম্পিউটারে যে অপারেটিং সিস্টেম চালাই তা বাজার থেকে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দিয়ে
সিডি-ডিভিডি ডিস্ক কিনে এনে তারপরে কম্পিউটারে অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল দিই
। এটি একটি খুবই ভাল কাজ(কারণ জানতে চান ?) কারণ টা জানতে চাইলে একটু
মনোযোগ সহকারে নিচের লাইন গুলো পড়ে নিন । অনেকে সখের বসে Microsoft কম্পানি
থেকে লাইসেন্স কিনে চালান এতে তার সখ পূরন হচ্ছে ঠিকই কিন্তু আমাদের দেশের
হাজার-হাজার, লক্ষ-লক্ষ টাকা গুলো তো Microsoft নিয়ে নিল সেদিকে খেয়াল
করলেন না । এভাবে তারা টাকা কামাই করল আর আমাদের দেশের টাকা নষ্ট হলো(মানে
তারা টাকা গুলো নিয়ে নিল), কারণ যে ডিস্ক টি আপনি ৫০ থেকে ৬০ টাকা দিয়ে
কিনতে পারতেন এবং জেনুইন করার জন্য নানা উপায় ডিস্কটির ভেতরে
সাধারণত(সফটওয়্যার এর মাধ্যমে) দেয়া থাকে সেগুলো ফলো করতেন অথবা আমাদের এই
ব্লগের কিংবা গুগলের সাহায্যে আপনি খুব সহজেই জেনুইন করে ফেলতে পারতেন
আপনার অপারেটিং সিস্টেমটি, তাহলে দরকার কি হাজার হাজার টাকা দিয়ে
কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম এর লাইসেন্স ক্রয় করা? একটু ভিন্ন উপায়ে আপনি
টাকা বাঁচিয়ে আপনার অপারেটিং সিস্টেম জেনুইন করতেন এতে হয়তো আপনার কিছু
মূল্যবান সময় নষ্ট হতো কিন্তু সেই সাথে আপনি একটু জ্ঞান অর্জন করতে পারতেন ।
তাহলে আসুন আমরা দেশের টাকা বাঁচাই এবং দেশকে কিছুটা হলেও অভাব মুক্ত করি ।
দ্বিতীয়-বারে শুরু করছি সফটওয়্যার দিয়ে ।
আমদের
সকলের কিন্তু প্রায় সময়েই দেখা যায় যে আমরা যেসব সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার
করছি এগুলোর বেশির ভাগই ফ্রি, তারপরেও কিছু সফটওয়্যার আছে যেগুলোর লাইসেন্স
কিনে ব্যবহার করতে হয় । ধরুন আমার এখন এমন কিছু সফটওয়্যার প্রয়োজন পড়লো
অথবা পছন্দ হয়ে গেল কিংবা সখের বসে ব্যবহার করতে মন চায়, যার লাইসেন্স টাকা
দিয়ে কিনতে হয় তখন আমি কি করবো ? অব্যশই উপায় আছে, আপনি তখন সেই সফটওয়্যার
এর নাম এবং তারপরে ফ্রি ব্যবহার করার ইচ্ছা টা গুগলে সার্চ বক্সে লিখে
সার্চ দিলে অব্যশই একটি উপায় তো পাবেন । আর যদি উপায় না পান তাহলে আপনি
অব্যশই ওই সফটওয়্যারটির Crack অথবা Patch খুজে বের করুন । তারপরে Crack
অথবা Patch দ্বারা এক্টিভেট এর নিয়ম অব্যশই এই ব্লগে অথবা গুগলে সার্চ দিয়ে
পড়ে নিন । তাহলে আপনার ঝামেলা শেষ, আর যদি এতে আপনার মন না সায় দেয় তাহলে
অবশ্যই আপনি যে সফটওয়্যারটি ফ্রি তে ব্যবহার করতে চান, সেই সফটওয়্যারটির
দ্বারা কী কী কাজ করা যায় এবং কি সকল সুবিধা ঐ সফটওয়্যার থেকে ভোগ করা যায়
তা লিখে গুগলে সার্চ দিয়ে খুজে নিন । আশা করি বিকল্প অনেক সফটওয়্যার পাবেন
যার দ্বারা হয়তো আপনার কাখ্ঙিত সফটওয়্যার এর চাইতে অনেক বেশি গুণ সুবিধা
ভোগ করতে পারবেন । তাহলে আর দরকার কি দেশের টাকা দিয়ে বিদেশী সফটওয়্যার এর
লাইসেন্স ক্রয় করা ? উপরের পদ্ধতিটি অবলম্বন করে আপনি ইচ্ছা করলে দেশের
অনেক টাকা বাঁচাতে পারেন । আশা করি অনেকে এভাবে দেশের টাকা ব্যায় না করেই
বিদেশী জিনিসের স্বাদ গ্রহণ করবেন এবং দেশের টাকার অপচয় রোধ করা নাগরিক
হিসেবে আমাদের কর্তব্য । তাই আসুন কর্তব্য পালন করি এবং ফ্রি তে বিদেশী
সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার শুরু করি ।
তৃতীয়-বারে শুরু করছি গেমস দিয়ে ।
আমি
তো নতুন গেমস পেলে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে সারাদিন-ভর শুধু গেমস করি যতক্ষণ
পর্যন্ত এর শেষ না দেখতে পাচ্ছি । তাই আমাকে একজন গেমস পাগল বা ভক্ত, যা
ইচ্ছে হয় বলতে পারেন । আমার মত এমন অনেকেই আছে যারা শুধু সারাদিন গেমস নিয়ে
পড়ে খাকে, তবে আমি এখন একটু কম সময় দেই, কারণ গেমস করে আমার ভবিষৎ অন্ধকার
করে ফেলেছি, আর অন্ধকার করতে চাই না, যদি সারাজীবন গেমস করি তাহলে আমি এই
জীবনে আমার নিজের জন্য এবং দেশের জন্য কিছুই করতে পারবো না তাই যতোটা পারি
এটি থেকে একটু দূরে থাকি । তবু ও গেমস করি তবে খুব অল্প । এবারে তাহলে
কাজের কথায় চলে আসি । আপনারা যারা গেমস করেন তারা একবার ভেবে দেখুন গেমস
করা এবং ঘুমের মধ্যে সপ্ন দেখা কি সমান নয় ? যে সময় টুকু গেমস করেন সে সময়
টুকু যদি প্রোগ্রামিং শেখেন তাহলে হয়তো আপনি একদিন একজন প্রোগ্রামার হতে
পারবেন । আরে ভাই প্রোগ্রামিং শেখা টা কে গেমস ভেবে শিখেন তাহলে দেখবেন
আপনি ১ বছর এর ভিতরে কতটা উন্নতি করতে পারছেন এবং এই উন্নতি টা শুধু
প্রোগ্রামিং শেখার পরেই বুঝবেন এবং যারা প্রোগ্রামিং এ খুব ভাল শিক্ষা দেন
তাদের থেকে শিক্ষা অর্জন করলেই আপনি সফল হতে পারবেন, আর যারা প্রোগ্রামিং
ভালো বুঝে না তাদের থেকে শিক্ষা অর্জন করেন তাহলে আপনার প্রোগ্রামিং
শিক্ষার উপর বিরক্তি চলে আসবে ।
এবার আবার পূর্বের কথায় ফেরত আসি,
গেমস যারা করেন বা করবেন তাদের বলছি । আপনারা গেমস এর লাইসেন্স গুলো অনেক
টাকা খরচ করে কিনলে আমাদের দেশে টাকা গুলো তো ভিনদেশী/বিদেশীরা নিয়ে নেবে
খুব সহজে, এভাবে সবাই চলতে থাকলে দেশে অভাব দেখা দিবে এবং আপনি বা আমরা
যাদের গেমস কিনবো তাদের দেশের আর্থিক উন্নতি হবে । আশা করছি বিষয়টি বুঝতে
আর কিছু বাকী রইল না । তবে কি আমরা গেমস করা ছেড়ে দিব ? আমার উত্তর হবে,
অব্যশই না । কারণ আমি তো আপনাদের গেমস ছাড়তে বলি নাই, শুধু বলেছি বেশি
মূল্য দিয়ে আমাদের গেমস কিনতে হবে কেন । যেখানে আমরা আপনারা দেশের ভিতরে
গেমস এর সিডি-ডিভিডি ডিস্ক ৪০ থেকে ৫০ টাকা তে পাই সেখানে আশা করবো আর কেউ
ইন্টারনেট থেকে গেমস এর লাইসেন্স 50-100 Dollar / ডলার খরচ করে কিনে দেশের
অপচয় করবেন না ।
চতুর্থ-বারে এন্টিভাইরাসের বিষয়টিতে আসি ।
বলুন
তো কোন দেশের মানুষ গুলো প্রথমে ভাইরাস আবিষ্কার করেছিল, কে সেই মানুষ,
নাম কি তার ? বলতে পারলেন না তো, কারণ আপনার হয়তো জানা নেই কিংবা মনে নেই,
আর যারা বলতে পারলেন তাদের ধন্যবাদ । আমার কিন্তু মনে নেই তবে মোস্তফা
জব্বার এর রচিত একটি বইয়ে ২০০৯ সালে পড়ে ছিলাম । যাই হোক সেই ভাইরাস
তৈরী-কারী এমন কিছু ভাইরাস তৈরী করে ছিল যা কম্পিউটারে প্রবেশ করলে
কম্পিউটার চালানো যেত না এবং ঐ ভাইরাস নিমূল করার জন্য সেই ভাইরাস তৈরী
কারক এর ঠিকানা কম্পিউটারে বার-বার দেখা যেত এবং অন্য সব প্রোগ্রাম চালানো
যেত না । প্রথম দিকে এভাবে ভাইরাসের শুরু হয় । কিন্তু বর্তমান যুগে
সম্পূর্ণ আলাদা । তো বুঝেন আমরা যে এন্টিভাইরাস গুলো চালাই সেই কম্পানি
গুলো এবং কিছু অসাধু ব্যাক্তি হয়তো এমন কিছু ভাইরাস তৈরী করে রেখেছে যা
আমাদের কম্পিউটারে মাঝে মাঝে সমস্যা তৈরী করে সাথে সাথে আমাদের কম্পিউটারের
নিরাপত্তা ভেঙ্গে আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্য চুরি করে থাকে এবং আমরা এই সকল
সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাই বলেই এন্টিভাইরাস কম্পানি আমাদের কাছে কিছু
এন্টিভাইরাস বিক্রি করতে পারছে এবং কোটি কোটি ডলার কামাই করছে । তো কী ? হি
হি হি । আমরা তো বোকাই রয়ে গেলুম । ওরা যেমন আমাদের দূর্বল এবং বোকা
বানিয়ে টাকা কামাই করছে তেমন আমরা ও তাদের ধোকা দিয়ে ইচ্ছে করলে আমাদের
দেশের টাকা দেশেই রাখতে পারি । কীভাবে ? আমাদের যারা বোকা বানিয়ে টাকা
কামাই করে তাদের মত আরও কিছু ভাল মানুষ আছে যারা এসব এন্টিভাইরাস নিয়ে
গবেষণা করে, আমাদেরকে ফ্রি লাইসেন্স ইন্টারনেট এর মাধ্যমে দিচ্ছে । যেমন
ধরুন আমি আমার ব্লগে রেগুলার KASPERSKY এর লাইসেন্স দিই । আমি আবার আরেক
সাইট থেকে সংগ্রহ করি এবং তা পরীক্ষা করি তারপরে আমার ব্লগে দেই, যেন কেউ
প্রতারণার শিকার না হন । এভাবে অনেকে সাধারণ ব্যবহারকারীদের সাহায্য করে
যাচ্ছেন । শুধু মাত্র দেশের সম্পদ রক্ষা করার জন্য । এখন এই সময়ে যারা
400-500 টাকা দিয়ে বাজার থেকে লাইসেন্স এবং ডিস্ক কিনেন তারা মোটেই
বুদ্ধিমানের পরিচয় দিতে পারছেন না । কারণ এখন সব কিছু ফ্রি তে ইন্টারনেটে
পাওয়া যায় । তো আপনি কেন বোকামী করে এন্টিভাইরাস এবং লাইসেন্স টি কিনতে
যাবেন । আপনি যদি 350-300 টাকা দিয়ে গ্রামীনফোন, সিটিসেল এর নাইট
আনলিমিটেড ইন্টারনেট পেকেজ টি নেন তাহলে এক-রাতে এন্টিভাইরাস এর নতুন
সফটওয়্যার টি ডাউনলোড দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লেই সকালে দেখবেন আপনার এন্টিভাইরাস
সফটওয়্যার টি ডাউনলোড হয়ে গেছে এবং তারপরে আপনি ইন্টারনেট থেকে আপনার
এন্টিভাইরাসের লাইসেন্স টি এই ব্লগের সাহায্যে অথবা গুগলে খোঁজ করে নিতে
পারেন তারপরে শুধু এক্টিভেট করবেন তাহলেই তো হয়ে গেল আর আপনার বাকী
ইন্টারনেট পেকেজের মেয়াদ দিয়ে ছিনেমা, গান, সফটওয়্যার গেমস প্রোগ্রামিং
শেখার পিডিএফ বই ডাউনলোড করে নিতে পারেন । তো লাভ আপনার এবং দেশের, কারণ
আপনি একটু বেশি খাটুনি করে জ্ঞান অর্জন করতে পারলেন এবং দেশের টাকা ভিনদেশী
দের হাতে যাওয়া থেকে রক্ষা পেল । তো এভাবে আপনি কিছু করলে আপনার সুবিধা
হলো এবং দেশের কোন ক্ষতি হলো না ।
বর্তমান সময়ে আমরা যেভাবে
কম্পিউটার-ল্যাপটপে, iphone এবং অন্যান্য ফোনে টাকা দিয়ে অনেকে সফটওয়্যার,
অপারেটিং সিস্টেম, গেমস, এন্টিভাইরাস কিনে চালাই তাতে অনেক দেশের মানুষ এবং
সেই সকল দেশ লাভবান হচ্ছে এবং আমাদের দেশের টাকার অপচয় হচ্ছে । তাই আসুন
এবার থেকে আমারা বিদেশী সবকিছু ফ্রি তে চালানোর অভ্যাস গড়ে তুলি এবং দেশের ও
দশের ভবিষৎ সুন্দর করি ।